একজন দক্ষ, আদর্শ ও স্মার্ট ড্রাইভিং প্রশিক্ষক হতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানা ও দক্ষতা অর্জন করা আবশ্যক—

✳️একজন দক্ষ, আদর্শ ও স্মার্ট ড্রাইভিং প্রশিক্ষক হতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানা ও দক্ষতা অর্জন করা আবশ্যক—
১. ড্রাইভিং সম্পর্কিত মৌলিক দক্ষতা
✅ গাড়ি চালানোর প্রাথমিক ও উন্নত কৌশল: স্টিয়ারিং নিয়ন্ত্রণ, গতি সামঞ্জস্য, ব্রেকিং, লেন পরিবর্তন, ওভারটেকিং, পার্কিং ইত্যাদি।
✅ বিভিন্ন ধরণের গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা: ম্যানুয়াল ও অটোমেটিক উভয় ধরনের গাড়ি চালানোর দক্ষতা।
✅ সুরক্ষামূলক ড্রাইভিং (Defensive Driving): দুর্ঘটনা এড়াতে সঠিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঝুঁকিপূর্ণ চালকদের চিনতে পারা, খারাপ আবহাওয়ায় নিরাপদে গাড়ি চালানো। ২. ট্রাফিক আইন ও নিয়ম-কানুনের জ্ঞান
✅ সড়ক পরিবহন আইন (Road Transport Act) বোঝা ও প্রয়োগ: ট্রাফিক সিগন্যাল, রোড মার্কিং, স্পিড লিমিট, পার্কিং আইন, জরিমানা সংক্রান্ত নিয়ম।
✅ লাইসেন্সিং ও নথিপত্র সম্পর্কে ধারণা: ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ইনস্যুরেন্স ইত্যাদি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা। ৩. প্রশিক্ষণ প্রদান করার দক্ষতা
✅ শিক্ষার্থীদের মানসিকতা বোঝা: নবীন চালকদের ভয় কাটানো, আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া।
✅ শিক্ষাদানের পদ্ধতি: ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ ও ক্লাসরুম প্রশিক্ষণের সমন্বয় করা, ধাপে ধাপে শেখানো
✅ যোগাযোগ দক্ষতা: সহজ ভাষায় জটিল বিষয় বোঝানোর ক্ষমতা, ধৈর্যশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব।
✅ স্মার্ট টিচিং টেকনিক: ভিডিও, সিমুলেটর, মডেল কার বা ডেমো গাড়ি ব্যবহার করে শেখানো। ৪. গাড়ির যান্ত্রিক জ্ঞান ও সমস্যা সমাধান
✅ গাড়ির বেসিক মেকানিক্স বোঝা: ইঞ্জিন, গিয়ার, ব্রেক, ক্লাচ, এক্সেলেটর, চাকা, সাসপেনশন ইত্যাদির কার্যপ্রণালী জানা।
✅ প্রাথমিক মেরামতের জ্ঞান: ব্যাটারি সমস্যা, টায়ার পাংচার, ব্রেক ফেইল, ইঞ্জিন গরম হওয়া, লাইট সমস্যা ইত্যাদির সমাধান করা। ৫. জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার দক্ষতা
✅ দুর্ঘটনা এড়ানোর কৌশল: ব্রেকিং টেকনিক, রোড হ্যাজার্ড চিনতে পারা, ঝুঁকিপূর্ণ চালকদের চিনতে পারা। ✅ প্রাথমিক চিকিৎসা (First Aid): দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া, অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে পারা। ৬. প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও স্মার্টনেস
✅ মডার্ন গাড়ির প্রযুক্তি: ABS ব্রেক, ক্রুজ কন্ট্রোল, লেন ডিপারচার সিস্টেম, ইলেকট্রিক গাড়ির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা।
✅ GPS ও নেভিগেশন ব্যবহারের দক্ষতা: গুগল ম্যাপ, ওয়েজ অ্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করে পথ নির্ধারণ করা।
✅ অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার: ইউটিউব, অনলাইন কোর্স, ট্রাফিক আপডেট ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেকে আপডেট রাখা। ৭. পেশাদারিত্ব ও ব্যক্তিত্ব গুণাবলী
✅ ধৈর্য ও নম্রতা: শিক্ষার্থীদের ভুল মেনে নেওয়া ও ধৈর্য ধরে সংশোধন করা।
✅ বিশ্বাসযোগ্যতা ও দায়িত্বশীলতা: সময়নিষ্ঠ, সঠিক নির্দেশনা দেওয়া এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে কঠোর থাকা। ✅ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্মার্ট উপস্থিতি: পোশাক-পরিচ্ছদ ও ব্যক্তিত্ব এমন হওয়া উচিত, যাতে শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষককে সম্মান করে। ৮. মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন চালানোর জ্ঞান (অপশনাল)
✅ অনেক ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল, ট্রাক বা বাস চালানোর জ্ঞান থাকলে অতিরিক্ত সুবিধা হয়।
একজন দক্ষ ড্রাইভিং প্রশিক্ষক শুধু গাড়ি চালানো শেখান না, বরং সঠিকভাবে গাড়ি চালানোর সংস্কৃতি ও নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের গুরুত্বও তুলে ধরেন। আপনি যদি সত্যিই একজন ভালো প্রশিক্ষক হতে চান, তাহলে প্রতিনিয়ত নিজের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।