বাংলা চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্র সালমান শাহ

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম সালমান শাহ। ৯০ দশকের বাংলা সিনেমার ট্রেন্ডসেটার এই নায়ক অল্প সময়েই কোটি দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। যদিও তার জীবন ছিল সংক্ষিপ্ত, তবে তার প্রভাব আজও অমলিন। জন্ম ও প্রাথমিক জীবন সালমান শাহের জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলায়। তার আসল নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল তার, যা পরবর্তী সময়ে তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের শীর্ষস্থানীয় নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। সিনেমায় আগমন ও তারকা খ্যাতি সালমান শাহের চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে। শাবনূরের সঙ্গে তার জুটি রাতারাতি জনপ্রিয়তা পায় এবং বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন যুগের সূচনা করে। এরপর একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন নায়কে পরিণত হন। মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে সালমান শাহ মোট ২৭টি সিনেমা উপহার দেন, যার প্রায় সবগুলোই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে: কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৩) তোমাকে চাই (১৯৯৪) অন্তরে অন্তরে (১৯৯৪) বিচার হবে (১৯৯৫) স্নেহ (১৯৯৫) স্বপ্নের পৃথিবী (১৯৯৬) প্রেম পিয়াসী (১৯৯৭) হঠাৎ মৃত্যু ও রহস্য সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ঢাকার নিউ ইস্কাটনের নিজ বাসায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার মৃত্যু নিয়ে নানা বিতর্ক ও গুঞ্জন রয়েছে। কেউ একে আত্মহত্যা, আবার কেউ হত্যাকাণ্ড বলে মনে করেন। দীর্ঘ তদন্তের পরও এটি এখনো রহস্যজনক রয়ে গেছে। বাংলা সিনেমায় সালমান শাহের অবদান সালমান শাহ ছিলেন বাংলা সিনেমার ফ্যাশন আইকন। তার স্টাইল, অভিনয়ের দক্ষতা ও পর্দায় অভিব্যক্তি দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল। তিনি আধুনিক বাংলা সিনেমার পথপ্রদর্শক ছিলেন এবং নতুন ধারার নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। আজও বাংলা সিনেমার দর্শকরা তাকে স্মরণ করেন এবং নতুন প্রজন্মের অনেক নায়ক তাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেন। স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি যা করেছেন, তা বাংলা চলচ্চিত্রে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।